টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনার চরাঞ্চলসহ উপজেলায় চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে ভুট্টার আবাদ। বর্তমানে ভুট্টা সংরক্ষণ ও মাড়াই কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কৃষাণ-কৃষাণীরা। তবে স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে আশানুরূপ ভুট্টার দাম না পাওয়ায় হতাশায় চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি বছর যমুনা চরাঞ্চলসহ উপজেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ১০ হেক্টর এবং ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে ২৭ হাজার ৬৪২ টন।
চলতি বছরে বন্যায় উপজেলার অর্জুনা, গাবসারা, গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যার এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে যমুনার বালুচরে ভুট্টা চাষ করেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে ভুট্টা চাষিদের মধ্যে উন্নতমানের ভুট্টার বীজ ও সার বিতরণ করেছেন। এছাড়া কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে আমাদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন। ভুট্টাচাষ অত্যন্ত সহজ ও লাভজনক। তাছাড়া অন্য ফসলের মতো সার ও সেচের তেমন প্রয়োজন হয়না। হাট-বাজারগুলোতেও চরাঞ্চলের অন্য ফসলের চেয়ে ভুট্টার চাহিদা বেশি থাকলেও ভালো দাম না পাওয়ায় হতাশ চাষিরা।
সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে গিয়ে দেখাযায়, সেখানে প্রতি মণ শুকনা ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে নয়শ থেকে এক হাজার টাকায়। উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের যমুনা চরাঞ্চলের ভুট্টাচাষি কোরবান তালুকদার, আব্দুল মালেক, সিরাজুল ইসলাম বলেন- প্রতিবছর বন্যায় আমাদের বীজতলা, সবজি খেতসহ সব ফসল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে আমরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হই।
আর এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বন্যা পরবর্তী সময়ে যমুনার বুকে জেগে উঠা চরে অন্য ফসলের পাশাপাশি আমরা ভুট্টাচাষ করে থাকি। ভুট্টাচাষে খরচ অনেক কম হলেও বাজারে ভালো দাম না পেলে তেমন একটা লাভ হবে না। দাম কম হওয়ায় এবছর আমাদের তেমন একটা লাভ হবে না।
রামপুর গ্রামের ভুট্টাচাষি চান্দু শেখ বলেন, এবছর আমি প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে ভুট্টাচাষ করেছি। বিঘায় প্রতি ২৫ থেকে ৩০ মণ ফলন পেয়েছি। বাজার ভালো থাকলে ১৫ বিঘাতে খরচ বাদে প্রায় তিন লাখ টাকা লাভ হতো। গত বছর প্রতিমন ভুট্টা বিক্রি করেছি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় । সেই ভুট্টা এবছর বিক্রি করছি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায়।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে উন্নত মানের ভুট্টাবীজ ও সার বিতরণ করেছি। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে আমরা কৃষকদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছি।
গতবছর উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলের ভুট্টাচাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ১৫২ হেক্টর। এবছর এর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ১০ হেক্টর। ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে ২৭ হাজার ৬৪২ টন। আগামীতে চরাঞ্চলসহ উপজেলায় ভুট্টার আবাদ আরো ব্যাপক পরিসরে বৃদ্ধি পাবে।
টিএইচ